ব্রেকআপ হওয়ার ১৯ বছর পর। বাসর রাতে বউয়ের ঘোমটা খুলে চমকে উঠলাম! মীম মীম বলে এক দৌড়ে রুমের বাহিরে চলে গেলাম!
এটা কি করে সম্ভব! মীম কি দিন দিন যুবতী হচ্ছে?? সেই ১৯ বছর আগে আমার গার্লফ্রেন্ড ছিলো মীম! ওর বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর ডিসিশন নিয়েছিলাম আর বিয়েই করবো না জীবনে! ব্যাস! বাবার ব্যবসা দেখা-শুনা করতে শুরু করলাম!
এই ১৯ বছরে ব্যবসায় অনেক উন্নতি করেছি ! বিয়ে করতে চাইছিলাম না! কিন্তু আম্মা অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় আর বাবার চাপে এক প্রকার বাধ্য হয়েই বিয়ে করতে হয় আমাকে,,,
বউকে আমি দেখতেও যাইনি! বাবা সব ম্যানেজ করেছেন! কিন্তু মীম এই ১৯ বছর পরেও এই যৌবন কিভাবে ধরে রাখলো? ও তো আরও ছোট হয়ে গেছে? এটা কেমনে সম্ভব??
আমার চিল্লানি শুনে বাবা নিচ তলা থেকে হাক জুড়েছেন,,,,
“ছোটকালের স্বভাব এখনো গেলো না তোর!?? যা রুমে যা! আমি বাবাকে খুব ভয় পাই! তাই জলদি করে রুমে চলে গেলাম! রুমে গিয়ে দেখলাম বউ আমার খুব কান্না করতেছে! আমি বললাম কি হয়েছে তোমার? কান্না শুরু করলে কেন?
–বউ বললো, বাসর রাতে আপনি আমার মাকে ডাকছেন কেন??
আমি: মানে কি?
বউ: মানে আমার আম্মুর নাম হচ্ছে মীম! আর আমি দেখতে হুবহু আমার আম্মুর মতো হয়েছি! আমি: ওহহহহ তাই বুঝি!!
মনে মনে বললাম, সবুরে মেওয়া ফলে! একটু ধৈর্য ধরলে গার্লফ্রেন্ড শাশুড়ীও হয়!!
বাসর রাতে গল্পের দ্বিতীয় অংশ: নতুন শুরুর অজানা পথ
কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। মীমের মেয়ে, মানে আমার বউ, সেই মীমের মতোই সুন্দরী! কিন্তু বাস্তবটা মেনে নেওয়া কঠিন।
আমি বউয়ের দিকে তাকিয়ে বললাম, “তোমার নাম কী?”
“আমার নাম মেহেজাবীন,” বউ উত্তর দিলো, “কিন্তু সবাই মীম ডাকে।”
মীম নামটা শুনে মনে হলো ইতিহাস নিজেকে আবারো লিখছে। আমি বউয়ের হাত ধরে বসালাম এবং বললাম, “আমি তোমার আম্মুকে চিনি, আমরা একসময় অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলাম। আমার মনে পড়ে সেই দিনগুলোর কথা।”
মীম একটু হাসলো, হয়তো সেই বন্ধুত্বের কথা মায়ের কাছ থেকে শুনেছে। সে বলল, “আম্মু মাঝে মাঝে আপনার কথা বলতেন। বলতেন, ‘রিয়াদ ছিল এক অসাধারণ বন্ধু।’ কিন্তু তারপরই তাঁর বিয়ে হয়ে গেল আর আমি জন্ম নিলাম।”
আমাদের কথোপকথনে সময় যেন থেমে গিয়েছিল। আমার চোখে তখনো মীমের স্মৃতি ভাসছিল। কীভাবে মীমের হাসি, মজা আর খুনসুটি আমার জীবনের অংশ ছিল। তবে নতুন মীম, আমার বউ, আমাকে বাস্তবের মাটিতে ফিরিয়ে আনলো।
মীম কাঁদছিলো, তাকে শান্ত করতে আমি বললাম, “তুমি এখন আমার জীবনসঙ্গী। আমরা একসাথে নতুন জীবন শুরু করবো। তোমার মা ছিলেন আমার প্রিয় বন্ধু, কিন্তু তুমি আমার জীবনের সঙ্গী। আসো, নতুন সূচনা করি।”
আমাদের কথোপকথন চলতেই থাকলো। মীমের মায়ের সম্পর্কে জানতে পারলাম আরও কিছু তথ্য। মীমের মা, অর্থাৎ আমার পুরনো বন্ধু, জীবনে অনেক কিছু সহ্য করেছেন। স্বামীর অকাল মৃত্যু, সংসারের দায়িত্ব নেওয়া এবং মেয়েকে মানুষ করা—সব কিছুই তিনি একাই সামলেছেন।
আরও পড়ুন
- বাসর ঘরে চোর
- গার্লফ্রেন্ডের জন্মদিন উপলক্ষে গিফট!
- পৃথিবীর শেষতম এই রাস্তায় একা একা হাঁটাচলা বা গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ
মীম বলল, “আমার আম্মু আপনাকে নিয়ে অনেক গর্ব করতেন। তিনি সবসময় বলতেন, ‘রিয়াদ জীবনেও পিছপা হয়নি।’ আমি আজকে সেই রিয়াদের বউ। এটা ভাবতে অনেক ভালো লাগে।”
আমি মীমের চোখে তাকালাম এবং বললাম, “তোমার আম্মু একসময় আমার অনেক কিছু শিখিয়েছেন, সাহস দিয়েছেন। আমি তোমার পাশে থাকবো এবং তোমার জীবনকে সুন্দর করার চেষ্টা করবো।”
মীম আমার কথায় কিছুটা স্বস্তি পেলো। আমাদের সম্পর্কের এই নতুন অধ্যায় শুরু হলো। আমরা দুজনেই জানি, আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে, কিন্তু একসাথে আমরা সবকিছু মোকাবিলা করতে পারবো।
পরের দিন, বাবা-মা’কে জানালাম আমাদের ভাবনাগুলো। তারা খুব খুশি হলেন। মা বললেন, “মীম, তুমি আমাদের পরিবারের নতুন সদস্য। রিয়াদকে ভালোবেসে সারা জীবন কাটিয়ে দিও।”
আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত নতুন আশা আর ভালোবাসায় ভরে উঠলো। মীমের মা, আমার পুরনো বন্ধু, আমাদের জীবনে নতুন রঙ এনেছেন। নতুন মীম আমার পাশে থেকে আমাকে সুখী করলেন। আমাদের এই নতুন পথচলা যেন সবসময় ভালোবাসা, সাহস আর সমর্থনে ভরে থাকে।
এইভাবেই আমাদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো, যেখানে পুরনো বন্ধুত্ব আর নতুন ভালোবাসার মিশ্রণে আমরা এক নতুন দিগন্তের দিকে যাত্রা করলাম।
শায়েশা থেকে যে কোন ড্রেস অর্ডার করলেই পাবেন ডিস্কাউন্ট!
মেহেজাবীনের সাথে রিয়াদের বিবাহিত জীবন কেমন?
রিয়াদ এবং মেহেজাবীনের বিবাহিত জীবন শুরুতেই নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে তারা একে অপরের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং সম্মান প্রদর্শন করতে শিখেছিল।
নতুন জীবনের প্রথম দিনগুলি
প্রথম কয়েক মাস রিয়াদ এবং মেহেজাবীন একে অপরকে বুঝতে এবং মানিয়ে নিতে ব্যস্ত ছিল। রিয়াদ ব্যবসার কারণে ব্যস্ত থাকলেও, প্রতিদিন সন্ধ্যায় মেহেজাবীনের সাথে কিছুটা সময় কাটানোর চেষ্টা করত। এ সময় তারা একসাথে বসে গল্প করত, পুরোনো স্মৃতিচারণ করত এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করত।
ভালোবাসা এবং বোঝাপড়া
রিয়াদ এবং মেহেজাবীনের সম্পর্কের মূল ভিত্তি ছিল তাদের ভালোবাসা এবং বোঝাপড়া। রিয়াদ যখন বুঝতে পারল যে মেহেজাবীন শুধু তার স্ত্রীই নয়, বরং তার জীবনের নতুন প্রেরণা, তখন সে নিজেকে আরও পরিবর্তন করতে শুরু করল। মেহেজাবীনও রিয়াদের ব্যবসার বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠল এবং বিভিন্ন জায়গায় তাকে সাহায্য করতে লাগল।
পারিবারিক সম্পর্ক
রিয়াদের বাবা-মা মেহেজাবীনকে খুবই ভালোবাসত। মেহেজাবীন তাদেরকে নিজের বাবা-মায়ের মতোই দেখত এবং সবসময় তাদের সেবা করত। তাদের সান্নিধ্যে মেহেজাবীন নিজেকে অনেকটা নিরাপদ এবং সুখী মনে করত।
চ্যালেঞ্জ এবং সাফল্য
তাদের বিবাহিত জীবনে ছোটখাটো মনোমালিন্যও হতো, কিন্তু তারা সবসময় একে অপরকে সম্মান করত এবং সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হতো। রিয়াদ এবং মেহেজাবীন একে অপরকে কখনো অবহেলা করেনি এবং সবসময় পরস্পরের পাশে ছিল।
সন্তান এবং পরিবার
বিবাহের দুই বছর পর, তাদের জীবনে এক পুত্র সন্তানের আগমন ঘটে। তাদের জীবন তখন আরও আনন্দময় হয়ে ওঠে। রিয়াদ এবং মেহেজাবীন সন্তানের লালনপালনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, কিন্তু তারা নিজেরা যেন কখনো পরস্পরকে ভুলে না যায়।
সুখী দাম্পত্য জীবন
রিয়াদ এবং মেহেজাবীনের জীবনে নানা উত্থান-পতন থাকলেও, তারা সবসময় একে অপরকে ভালোবেসে এবং সম্মান করে চলেছে। তাদের ভালোবাসার গল্প একসময় সকলের কাছে প্রেরণা হয়ে উঠল। তাদের বিবাহিত জীবন সুখী এবং সম্পূর্ণ ছিল, কারণ তারা সবসময় একে অপরের পাশে ছিল এবং পরস্পরের জন্য সবকিছু করত।
সমাপ্তি
রিয়াদ এবং মেহেজাবীনের বিবাহিত জীবন ছিল ভালোবাসা, সম্মান, বোঝাপড়া এবং পারস্পরিক সহযোগিতার এক অসাধারণ উদাহরণ। তারা একে অপরকে ভালোবেসে এবং সম্মান করে চলেছে, যা তাদের জীবনকে সুখী এবং সমৃদ্ধ করেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি।