বাসর ঘরে ঢুকে দেখি কারেন্ট গেছে।নববধূ ঘুমিয়ে আছে। এইতো সুযোগ,যা করার এখনি করতে হবে। ঘুমন্ত অবস্থায় এসব করতে দারুণ মজা লাগে। অসম্ভব রুপবতী একটা মেয়ে বউ সেজে ঘুমাচ্ছে। খুব গরম লাগছে। হাতরে হাতরে পুরো ঘর খুঁজলাম, কোথাও বাতাস করার মতো কিছু নেই। গরমে ঘেমেই আলতো ভাবে নববধূর পাশে বসলাম। খুব সাবধানে কানের দুল, গ”লার হার খুললাম। মিনিট দশেক পর নববধূ ধড়ফড়িয়ে উঠলো। অসম্ভব রুপবতী একটা মেয়ে বউ সেজে ঘুমাচ্ছে। লাজুক হেসে বললো ” ডাকেননি কেনো! রাত অনেক হয়েছে তাই না! ” ” হু ” ” তো চলুন ” বিস্মিত হয়ে বললাম ” কোথায়? ” ” আজ তো আমাদের বাসর রাত।বাসর করতে হবে না? ” কথাটা বলে নববধূ আমায় জ”রিয়ে ধরলো। নববধূকে ভয়ে বলতেও পারছি না যে আমি ওনার স্বামী নই। আমি চোর, কারেন্ট গেছে এই সুযোগে চুরি করতে ঢুকেছি।
বাসর ঘরে চোর দেখে নববধূ ঘুমিয়ে আছে
ঘরের অন্ধকারে আমি স্তব্ধ হয়ে বসে আছি। নববধূর জড়িয়ে ধরা আমাকে আরও বেকায়দায় ফেলেছে। শরীর ঘামে ভিজে গেছে, মনে হচ্ছে পুরো পৃথিবীটা থমকে গেছে। মাথায় অনেক চিন্তা আসছে, কিন্তু কোনটাই কাজে লাগানোর মতো না। নববধূর কণ্ঠের মিষ্টতা আমাকে একপাশে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, আবার তার প্রতি আমার বেমানান উপস্থিতি আমাকে ভীত করছে।
“আপনি কি ঠিক আছেন?” নববধূর কণ্ঠে আবারও মমতার ছোঁয়া। আমি বুঝতে পারছি না কীভাবে সামলাবো এই পরিস্থিতি।
“হ্যাঁ, ঠিক আছি,” কণ্ঠে শীতলতা আনার চেষ্টা করলাম। “আমাকে একটু সময় দিন, কিছু কাজ বাকি আছে।”
নববধূ কিছুটা বিস্মিত হয়ে আমাকে ছেড়ে দিল। “কী কাজ?”
“আমি… আমি একটু…” বাক্য শেষ করতে পারলাম না। কী বলবো, কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। মনে মনে ভাবছি, হয়তো পালিয়ে যেতে পারলে ভালো হতো।
নববধূ হঠাৎ করে আমার হাত ধরে বললো, “আপনি কিছু লুকাচ্ছেন না তো?”
তার কণ্ঠে শঙ্কা শুনতে পেলাম। আরও বিপাকে পড়ে গেলাম। কী করবো, কীভাবে এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবো ভাবতে ভাবতে বুঝতে পারলাম, সত্যই হয়তো একমাত্র পথ।
“আসলে আমি…” আমি কাঁপতে কাঁপতে শুরু করলাম, “আমি তোমার স্বামী না। আমি চোর।”
নববধূর চোখ বড় হয়ে গেল। “কী বলছেন আপনি?”
আমি আবার বললাম, “হ্যাঁ, আমি চোর। কারেন্ট গেলে এই সুযোগে চুরি করতে ঢুকেছি।”
নববধূ কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে রইলো। তারপর হঠাৎ করে হাসতে শুরু করলো। “আপনি সত্যিই মজার মানুষ। এমন মজার গল্প কেউ বলেছে শুনিনি।”
“না, আমি মজা করছি না,” আমি দৃঢ়ভাবে বললাম। “এটা সত্যি।”
নববধূর হাসি থেমে গেল। “তাহলে আপনি চুরি করতে এসেছেন?”
“হ্যাঁ,” আমি স্বীকার করলাম। “কিন্তু আপনার সামনে এসে আমি এখন বুঝতে পারছি, আমি ভুল করেছি।”
নববধূ ধীরে ধীরে আমার কাছ থেকে সরে গিয়ে বসলো। তার মুখে মিশ্রিত অনুভূতির ছাপ। “তাহলে আপনি চোর। কিন্তু আপনার চোখে আমি কোন ভয় দেখতে পাচ্ছি না।”
আমি বললাম, “আমি সত্যি বলছি। আমি চোর, কিন্তু আপনার সামনে দাঁড়িয়ে আমার মন পাল্টে গেছে। আমি কিছু চুরি করতে পারিনি।”
- তমা মির্জা ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মিষ্টি জান্নাতকে আইনি নোটিশ পাঠালেন
- গার্লফ্রেন্ডের জন্মদিন উপলক্ষে গিফট!
- পৃথিবীর শেষতম এই রাস্তায় একা একা হাঁটাচলা বা গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ
নববধূ কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইলো। তারপর বললো, “ঠিক আছে। আপনি যদি সত্যিই চোর হয়ে থাকেন, তবে আপনি কেন চুরি করেন?”
এই প্রশ্নে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। কখনো এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হইনি। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বললাম, “জীবনের প্রয়োজন মেটাতে।”
“প্রয়োজন মেটাতে!” নববধূ কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলো। “আপনি জানেন, জীবনের প্রয়োজন মেটানোর অনেক পথ আছে। চুরি কেন?”
“আমি জানি,” আমি ধীরে ধীরে বললাম। “কিন্তু কখনো সঠিক পথ খুঁজে পাইনি।”
নববধূ কিছুক্ষণ চুপচাপ রইলো। তারপর বললো, “আমি আপনাকে একটা সুযোগ দিতে চাই। আপনি যদি সত্যিই সৎ হতে চান, তবে আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারি।”
আমি বিস্মিত হয়ে তার দিকে তাকালাম। “কীভাবে?”
“আপনি যদি সত্যিই নিজের জীবনে পরিবর্তন আনতে চান, আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারি। আপনি আমার স্বামীর পরিচয়েই এখানে থাকুন।”
এই প্রস্তাব শুনে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। “কী বলছেন আপনি? আমি তো চোর।”
“আপনি যদি সত্যিই পরিবর্তন আনতে চান, তবে এই সুযোগটা কাজে লাগান,” নববধূ বললো। “আমার স্বামীকে আমি আজও দেখিনি। আপনাকে তার জায়গায় গ্রহণ করতে আমার কোন আপত্তি নেই।”
এই প্রস্তাবে আমি দ্বিধায় পড়ে গেলাম। জীবনের পরিবর্তনের এমন সুযোগ পেয়ে আমি স্তব্ধ। আমি জানি না কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবো।
“আপনি কি সত্যিই এটা বলতে চাইছেন?” আমি শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞাসা করলাম।
“হ্যাঁ,” নববধূ দৃঢ়ভাবে বললো। “আমি চাই আপনি নতুন জীবন শুরু করুন।”
আমি ধীরে ধীরে সিদ্ধান্তে এলাম। “ঠিক আছে,” আমি বললাম। “আমি আপনার প্রস্তাব গ্রহণ করছি।”
নববধূ হাসলো। “তাহলে আমাদের নতুন জীবনের জন্য প্রস্তুত হন।”
এইভাবে, জীবনের অন্ধকার থেকে আলোতে আসার এক নতুন যাত্রা শুরু হলো। সেই রাতে, আমি সত্যিই নিজের জীবনে পরিবর্তন আনতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাম।
শায়েশা থেকে যে কোন ড্রেস অর্ডার করলেই পাবেন ডিস্কাউন্ট!
গল্পটি থেকে আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পেতে পারি:
- সৎ জীবনযাপন: সৎ পথে জীবনযাপন করার গুরুত্ব অপরিসীম। চুরি, মিথ্যা, বা অন্য কোনো অনৈতিক কাজ আমাদের জীবনের স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। একটি ভুল সিদ্ধান্ত আমাদের সারা জীবনের দুশ্চিন্তা এবং অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
- দয়া এবং ক্ষমার গুরুত্ব: নববধূর দয়া এবং ক্ষমা প্রদর্শন আমাদের শেখায় যে দয়া এবং সহানুভূতি কেবল অপরাধীকে নয়, পুরো সমাজকেও পরিবর্তন করতে পারে। মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনতে ক্ষমা একটি শক্তিশালী উপাদান।
- পরিবর্তনের সুযোগ: আমাদের জীবনে সবসময় পরিবর্তনের সুযোগ থাকে। এমনকি যারা ভুল পথে হাঁটছে, তাদেরও সঠিক পথে ফিরে আসার এবং নতুন করে শুরু করার সুযোগ আছে। জীবনে পরিবর্তন আনার জন্য সাহস এবং সংকল্পের প্রয়োজন।
- আস্থা এবং বিশ্বাস: নববধূর আস্থা এবং বিশ্বাস গল্পের চোরকে পরিবর্তনের পথে এগিয়ে নিয়েছে। জীবনে আস্থা এবং বিশ্বাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা অন্যকে প্রভাবিত করতে পারে এবং তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
- জীবনের মূল্যবোধ: জীবনে সঠিক মূল্যবোধ অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। সত্য, ন্যায় এবং সৎ পথে চলার মাধ্যমে আমরা একটি সুন্দর ও শান্তিময় জীবন গড়ে তুলতে পারি।
এই শিক্ষাগুলো আমাদের জীবনে প্রয়োগ করে আমরা নিজেকে এবং সমাজকে আরও উন্নত এবং সমৃদ্ধ করতে পারি।
আপনার মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ কমেন্ট করার অনুরোধ করছি।